সচেতন থাকুন সাইবার জগতে

বিশ্বব্যাপী সাইবার অপরাধ দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশেও এ অপরাধ সংঘটনের পরিসংখ্যান নেহাত কম নয়। আর তাই সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমাদের সাইবার অপরাধ ঠেকাতে এবং নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু বিষয়ে নজর দিতে হবে। একটু অসচেতন হলেই যে কেউ সাইবার অপরাধের শিকার হয়ে যেতে পারে।

চলুন জেনে নেই কোন বিষয়গুলোতে সতর্ক থাকা উচিত:

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে লিংক থেকে সাবধান

সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের অনলাইন প্রতিযোগিতা এবং এ ধরনের প্রচুর লিংক হাজির হয়। এসব লিংকের আড়ালেও লুকিয়ে থাকতে পারে ফিশিং বা স্প্যামিং উপকরণ। তাই এগুলো নিয়ে বাড়াবাড়ি না করাই ভালো। সবচেয়ে ভালো হয় আপনার সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন যে কোনো ধরনের লিংকে ক্লিক না করাই ভালো।

দ্বি-স্তরের নিরাপত্তা গ্রহণ

বেশিরভাগ অনলাইন অ্যাকাউন্টের জন্যই সাধারণত দ্বি-স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকে। তবে বিষয়টি একটু বেশি সময় নেয় বলে অনেকেই ঝামেলা এড়াতে এটি গ্রহণ করেন না। এটা একদমই উচিত নয়।

পাসওয়ার্ড শেয়ার না করা

অনলাইন যেকোনো অ্যাকাউন্টের জন্যই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এর পাসওয়ার্ড। তাই পাসওয়ার্ডকে সবসময় অন্যদের কাছ থেকে আড়ালে রাখতে হবে।

পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার না

স্বাভাবিকভাবেই পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক তুলনামূলকভাবে খানিকটা কম নিরাপদ। ফলে পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে গিয়ে ব্যক্তিগত তথ্য যতটা কম শেয়ার করা যায়, ততই ভালো। বিনামূল্যের এসব পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক অনেক সময়ই হ্যাকারদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।

ফিশিং এবং স্প্যামিংয়ে সতর্কতা

কোনো অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতিয়ে নিতে হ্যাকারদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হলো ফিশিং এবং স্প্যামিং। অনেক সময়ই অনলাইনে এমন কোনো অফার পাবেন, যেটি আপনার সামনে নানা ধরনের লাভ ছড়িয়ে রাখবে। কিন্তু স্বাভাবিকভাবে এ ধরনের অফার পাওয়া যায় না। তাই এ রকম কোনো অফার সামনে এলে সেটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে আসছে কি না, তা খেয়াল রাখুন। ইমেইল অ্যাকাউন্টেও প্রচুর আকর্ষণীয় অফারের ইমেইল আসে। এগুলো থেকেও সতর্ক থাকুন।

মোবাইলেও অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টিম্যালওয়ার

ডেস্কটপ পিসিতে অনেকেই অ্যান্টিভাইরাস এবং অ্যান্টিম্যালওয়্যার সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকলেও মোবাইলে তা করেন না। এটি একটি ভুল সিদ্ধান্ত। কারণে আপনার মোবাইলের মাধ্যমেও ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার আক্রমণ করতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কম তথ্য উন্মুক্ত রাখা

সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য কম পরিমাণে উন্মুক্ত রাখাই বাঞ্ছনীয়। সাথে সাথে প্রাইভেসি সেটিংকেও যতটা সম্ভব শক্তিশালী ও গোপনীয় রাখা নিরাপত্তার জন্য ভালো।

ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ককে সুরক্ষিত রাখুন

আপনি হয়তো আপনার নিজের ঘরেই ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে থাকেন যার মাধ্যমে আপনার মোবাইল ডিভাইসগুলোও পরিচালনা করেন। কিন্তু এই নেটওয়ার্ককেও সুরক্ষিত রাখাটা জরুরি।

বিশ্বস্ত সূত্র থেকে ডাউনলোড করুন

অনলাইনে সফটওয়্যারের বিপুল ভাণ্ডার থেকে অনেক সময়ই বিনামূল্যের সফটওয়্যার ডাউনলোডের সুযোগ পাওয়া যায়। এই সুযোগ ব্যবহার করেই অনেকে সফটওয়্যারের সাথে ম্যালওয়্যার পাচার করে থাকে পিসিতে। তাই বিশ্বস্ত সূত্র ছাড়া সফটওয়্যার ডাউনলোড করা ঠিক নয়।

আলাদা পাসওয়ার্ড এবং নিয়মিত পাসওয়ার্ড বদল

অনলাইনে একেকটি অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ একই পাসওয়ার্ড অনেকগুলো অ্যাকাউন্টে ব্যবহার করলে তাতে করে একটি পাসওয়ার্ডই সবগুলো অ্যাকাউন্টের কর্তৃত্ব নিয়ে নিতে যথেষ্ট। তাই প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্যই আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।

সফটওয়্যার হালনাগাদ রাখুন

যে কোনো ধরনের সফটওয়্যারকে সর্বদা আপডেট বা হালনাগাদ রাখার কোনো বিকল্প নেই। কারণ সব সফটওয়্যারের সর্বশেষ সংস্করণগুলোই সাধারণত সব ধরনের ভাইরাস বা ম্যালওয়্যারের হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলতে সক্ষম।