ম্যানেজিং কমিটি শিক্ষকদের ওপর খবরদারি করতে পারবে না

বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্‌রাসা পরিচালনা কমিটির প্রবিধানমালায় আসছে ব্যাপক পরিবর্তন। নতুন নীতিমালার আওতায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর পাসের হার কম হলে জবাবদিহিতা করতে হবে কমিটির সদস্যদের। এ ছাড়া যখন তখন শিক্ষকদের বহিষ্কারের ক্ষমতাও থাকছে না কমিটির।

সংশ্লিষ্টরা জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্তমানে পরিচালনা কমিটির একশ্রেণির সদস্যের নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠানের সভাপতির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারী ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের অর্থ লুট, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ-বাণিজ্য করার অভিযোগ আছে। ফলে যোগ্য সভাপতি নির্বাচন প্রতিষ্ঠানের শান্তি-শৃঙ্খলা ও লেখাপড়ার জন্য জরুরি।

তবে প্রস্তাবিত প্রবিধানে বেশকিছু ইতিবাচক প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তার মধ্যে আছে- ‘ইচ্ছা হলেই’ কোনোরকম অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষকসহ কোনো শিক্ষককে বরখাস্ত করা যাবে না। এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের পূর্বানুমতি নিতে হবে। কাউকে ৬০ দিনের বেশি সাময়িক বরখাস্ত করে রাখলে পুরো বেতন-ভাতা দিতে হবে। অস্থায়ী কমিটিতে কোনো ব্যক্তি একবারের বেশি থাকতে পারবেন না। অস্থায়ী কমিটি শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিতে পারবে না।

প্রস্তাব অনুযায়ী, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম অথবা কাঙ্ক্ষিত ফল না করলে পরিচালনা কমিটিকে শিক্ষা বোর্ডের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর পর তিন বছর এমন হলে এমপিও বাতিল বা প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি ও স্বীকৃতি বাতিল করা হবে। একই সঙ্গে পরিচালনা কমিটি বাতিল করতে পারবে শিক্ষা বোর্ড।

সংশোধনীতে যা থাকছে

কোনো শিক্ষক অদক্ষ, দুর্নীতি, কর্তব্যে অবহেলা, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের পরিপন্থী কাজ করলে তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে। তবে তদন্ত কমিটির সুপারিশে শাস্তি কার্যকর করতে হবে।

পরিচালনা কমিটি ছোটখাঁটো অভিযোগে চাইলেই প্রধান শিক্ষক কিংবা অন্য শিক্ষকদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

কাউকে দুই মাসের বেশি বরখাস্ত করে রাখতে পারবে না। রাখলে পুরা বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে। তবে বরখাস্ত বা অপসারণের প্রস্তাব শিক্ষা বোর্ডের আপিল ও সালিসি কমিটির মাধ্যমে পরীক্ষিত হতে হবে এবং বোর্ডের অনুমোদন লাগবে।

পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা পারিশ্রমিক নিতে পারবে না।

সভা বাবদ কী পরিমাণ অর্থ পরিচালনা কমিটি খরচ করতে পারবে তাও প্রবিধানে নির্ধারণ করে দেওয়া হচ্ছে।

কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না করলে পরিচালনা কমিটিকে বোর্ডের কাছে জবাবদিহিতা করার বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরপর তিনবছর ফলাফল খারাপ করলে সরকারি অনুদান বাতিল করা হবে। প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের অনুমতি ও স্বীকৃতি বাতিলের বিষয় থাকছে সংশোধনীতে।