শিক্ষার্থী ৫৬০০ এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে !

কালিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেরানীগঞ্জ । ১৯৩৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়টি। বর্তমানে প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় এখানে। মানসম্পন্ন শিক্ষাব্যবস্থা, দক্ষ পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষকদের আন্তরিকতায় গত কয়েক বছর ধরে উপজেলায় ঈর্ষণীয় সাফল্য লাভ করেছে বিদ্যালয়টি।

প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক ভর্তির চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। তবে শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক অপ্রতুলতা ও কক্ষ সংকট রয়েছে এখানে।

সম্প্রতি বিদ্যালয়টি আলোচনায় এসছে ভিন্ন কারণে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৫ হাজার ৬শ'। যা এককভাবে সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থীর রেকর্ড।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাজেদা সুলতানা জানান, দেশে ৬০ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ শিক্ষার্থী রয়েছে কেরানীগঞ্জের কালিগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। গত কয়েক বছর ধরে ক্রমাগত শিক্ষার্থীর চাপ বেড়েই চলেছে। এতে একদিকে তারা যেমন আনন্দিত অন্যদিকে শঙ্কিত।

শঙ্কার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, স্কুলের অবকাঠামো ও জনবলের সক্ষমতার চেয়ে প্রতিবছর কয়েকগুণ বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে। মানসম্পন্ন শিক্ষাব্যবস্থার কারণে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীরাও এখানে ভর্তি হতে চায়। এটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটা বড় সাফল্য। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে অতিরিক্ত ভর্তি নিতে গেলে সমস্যা হচ্ছে। এখানে ভর্তির জন্য প্রচুর তদরিব আসে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বাকি বিল্লাহ জানান, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ২০ জন শিক্ষক থাকার কথা। বর্তমানে রয়েছেন ৩৩ জন। ১৩ জন শিক্ষক বেশি থাকার পরও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী জন্য আরও অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষক প্রয়োজন।

তিনি বলেন, শ্রেণি কক্ষের কিছুটা সংকট থাকলেও অচিরেই তা কেটে যাবে। দোতলা যে ভবনটি রয়েছে সেটি ভেঙ্গে ৬ তলা ভবন করা হবে।

তিনি আরও জানান, লেখাপড়ার পাশাপাশি বিদ্যালয়টিতে বেশকিছু ব্যতিক্রম কার্যক্রম পরিচালিত হয়। যেমন- ক্ষুদে ডাক্তার কর্মসূচি, মা সমাবেশ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, সাংস্কৃতিক ক্লাব। স্কুলের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শিক্ষার্থীরা নিজেরাই দলবেঁধে করে থাকে।

ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জ্ঞান দেয়া হয়। মাসে একবার মা সমাবেশ হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমে অভিভাবকরা সহজে অংশ নিতে পারে।

সাংস্কৃতিক ক্লাবের মাধ্যমে নিয়মিত নাচ, গান, বাদ্যযন্ত্র শেখানো হয়। বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রামে এখানকার শিক্ষার্থীরা পারফর্ম করে থাকে।