প্রাথমিক শিক্ষকরা ১০ ও ১১ম গ্রেড নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নিলো

আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের নেতারা। শুক্রবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত নীতিনির্ধারণী সভায় এ দাবি জানান তারা। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষকদের দাবি পূরণ, হয়রানি বন্ধ এবং প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে ঐক্য পরিষদের ব্যানারে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সভায় যেসব সিদ্ধান্ত হলো:

১. সহকারি শিক্ষকের ১১ তম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকের ১০ম গ্রেডের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

২. প্রধান মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতকারের জন্য লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

৩. কর্মসূচি পালনের কারণে শিক্ষকগনের বিভাগীয় শোকজের প্রতিকারের ব্যবস্থা করা।

৪. পরবর্তীতে ঐক্য পরিষদের মিটিং ডেকে কর্মসূচি গ্রহন ও মহাসমাবেশের আয় ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করা।

সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আনিছুর রহমান, সদস্য সচিব মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ, প্রধান মুখপাত্র মোঃ বদরুল আলম, প্রধান সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আতিক, নীতিনির্ধারনী চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সরকার, প্রধান উপদেষ্টা আনারুল হক তোতা, ডা. ফরিদ উদ্দিন কামাল, আব্দুস সবুর, আব্দুল হক, সিদ্দিকুর রহমান, আবুল কাশেম, সাবেরা বেগম, রবিউল হাসান, আব্দুল খালেক প্রমুখ।

জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০তম গ্রেডে এবং সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে করার দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের অপেক্ষায় রয়েছেন শিক্ষকরা। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এমনকি মন্ত্রণালয়ও শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে আন্তরিকতা দেখাচ্ছেন।

তবে শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতেই চলমান পরিস্থিতির সুরাহা মিলতে পারে। সর্বশেষ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) সাবের হোসেন ও পরিচালক (পলিসি) ড. খান মো. নুরুল আমিনের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষকদের সভায়ও বিষয়টি উঠে আসে।

শিক্ষক নেতারা জানান, প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের বিষয়ে খুব শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত এবং সেখানেই তার সমাধান হবে বলে তারা আশা করছেন। সে পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহবান করেন তারা।

এর আগে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. জাকির হোসেন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা বসেন শিক্ষক নেতারা। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বিদেশ থেকে ফিরে এলেই সাক্ষাতের সময় পাওয়া যাবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়।

এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন নতুন গ্রেডে যেন কমে না যায় সেজন্য সজাগ রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একইসঙ্গে শিক্ষকদের দাবিসমূহ পূরণে আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রসঙ্গত, সহকারী শিক্ষকদের ভাষ্যমতে প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের বেতনের পার্থক্য তিন ধাপ। তাদের দাবি ছিল প্রধান শিক্ষকের পরের গ্রেড। প্রধান শিক্ষকরা ১১ তম গ্রেড হলে তাদের দাবি ১২ তম। আর প্রধান শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডে পৌঁছলে আমাদের ১১তম গ্রেড দিতে হবে।

কিন্তু খসড়া বিধিমালায় সেই দাবির প্রতিফলন নেই। স্বভাবতই নতুন পন্থা খুঁজতে হচ্ছে তাদের। শিক্ষকদের ভাষ্য, প্রধান শিক্ষকের পরেই তাদের বেতন রাখার দাবি দীর্ঘদিনের। শুধু তাই নয়, বিষয়টি আত্মসম্মানের বলেও উল্লেখ করেছেন তারা।