বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা সংকটে

বেসরকারি স্কুল-কলেজ–মাদ্রাসার যেসব অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর ভাতা ও কল্যাণ সুবিধার টাকা না পেয়ে বছরের পর বছর নিদারুণ সংকটে দিন কাটাচ্ছেন, তাঁদের ব্যথা সরকার আদৌ উপলব্ধি করতে পারে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।

কেননা, তাঁদের কষ্ট উপলব্ধি করতে পারলে বাস্তবোচিত ও কার্যকর উদ্যোগ নিশ্চয়ই এত দিনে গৃহীত হতো। যে মানুষগুলো সারা জীবন মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে সেবা দিয়ে গেছেন, তাঁদেরই এখন জীবনের এই পর্যায়ে এসে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এটি জাতির জন্য লজ্জার।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা অবসরের পর নানামুখী সংকটে রয়েছেন। পেনশন আর কল্যাণ বোর্ডের টাকা তুলতে ঢাকার অফিসে তাদের ঘুরতে হচ্ছে দিনের পর দিন।এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, জেলা পর্যায়ের শিক্ষা অফিসের চেয়ে কম লোক নিয়ে লাখো শিক্ষকের সেবা দিচ্ছেন তারা।

কিশোরগঞ্জের আরএস আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ ড. গুলশানারা বেগম। অবসর আর কল্যাণ ফান্ডের টাকার জন্য ঘুরছেন বহুদিন। হার্টের রোগী গুলশানারার বুকের ব্যথার চেয়েও টাকা না পাওয়ার ব্যথাটা যেন অনেক বেশিই প্রকট।

ড. গুলশানারা বলেন, ‘হার্ট ও ডায়াবেটিসের রোগী হয়েও আমাকে ঘুরতে হচ্ছে। একবার কলেজে যাচ্ছি, কখনো ঢাকায় আসছি আবারো কখনো অবসর সুবিধা বোর্ডে যাচ্ছি। জীবনের একটি অর্জন, আর তা ভোগ না করেই কি আমি মরে যাবো?’

পলাশীর ব্যানবেইস ভবনের নিচতলায় জীর্ণশীর্ণ কটি রুমে অবসর আর কল্যাণ বোর্ডের অফিস। যেখানে সারা দেশ থেকে আসা শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য নেই কোনো রেস্ট রুম। নেই ক্যান্টিন, মেডিকেল সুবিধা কিংবা প্রতিবন্ধীদের বসার জায়গা।

একাধিক ভুক্তভোগী জানান, বড় বড় জটিল রোগে ভুগেও আমরা এখানে এসেছি। এখন পর্যন্ত টাকা পায়নি। অনেক দূর থেকে আসছি। যাওয়া-আসাটা খুবই দুষ্কর। এই বয়সে আর চলে না। কিন্তু এখানে জনবলের অভাব রয়েছে। কল্যাণ আর অবসর বোর্ডের সচিবেরাও বলছেন, শিক্ষকদের ভোগান্তি দূর করতে কিছু পদক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে।

বেসরকারি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব অধ্যক্ষ শাহাজাহান আলম সাজু বলেন, ‘আমার জনবল কাঠামোতে ৪৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। সেখানে প্রাকটিক্যালি আমরা আছি ১৫-১৬ জন। তাহলে কিভাবে আমি ৫ লাখ ৪০ হাজার শিক্ষককে সেবা দিবো? একটা জেলা অফিসেও এর চেয়ে বেশি স্টাফ থাকে।