পদোন্নতিতে অনিয়ম প্রাথমিক শিক্ষকদের !

ভাণ্ডারিয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে জানা গেছে, বর্তমান সরকার ২০১৩ সালে সরকার রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণের ঘোষণা দিলে সংশ্লিষ্ট সব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদোন্নতি নীতিমালা প্রকাশ করা হয়। এতে ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ৩৩টি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষক পদোন্নতি পান। যাদের মধ্যে যোগ্যতাহীন অনেকেই প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পান।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত পরিপত্রে প্রধান শিক্ষক পদে যোগ্যতা এসএসসি কিংবা এইচএসসিতে ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগ থাকার কথা বলা হলেও সব ক্ষেত্রে তৃতীয় বিভাগ প্রাপ্তরাও বিধি বহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

তালিকাভুক্ত ২০ জন প্রধান শিক্ষকের ৭ জন শিক্ষক কুদ্দুস হাওলাদার, ১২৩ নম্বর পশ্চিম নদমুলা রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়, মো. মোশারফ হোসেন, ১১০ নম্বর রাধানগর চড়াইল রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়, মো. সেলিম সিকদার, ১২২নং পশ্চিম নদমুলা আদর্শ রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়, বদরুল আলম, ১২১ নম্বর পশ্চিম ইকড়ি রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়, এমাদুল হক, ১১৬ নম্বর দক্ষিণ পশ্চিম নদমুলা রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়, মো. নাসিরুল ইসলাম, ১৪৫ নম্বর উত্তর শিয়ালকাঠী রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়, মো. বেলায়েত হোসেন গাজী, ১০৩নং দক্ষিণ সিংহখালী রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বিধিমালায় প্রধান শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা না থাকলেও রহস্যজনক কারণে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পেয়ে যান।

এছাড়া ৪২ নম্বর পশ্চিম পশারিবুনিয়া সিকদার হাট রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী মাখন চন্দ্র হালদার ২০১২ সালে এমপিওভুক্ত হয়ে ২০১৩ সালে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পান। যেখানে নীতিমালায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে ৭ বছর ধরে এমপিওভুক্ত থাকতে হবে। চাকরির শর্তাবলীর সঙ্গে পদোন্নতির সাংঘর্ষিক এ পদোন্নতির সুবিধা ভোগ করে অনেকেই ইতিমধ্যে চাকরি থেকে অবসরে চলে গেছেন।

অন্যদিকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় টাইমস্কেল পেতে হলে একজন শিক্ষককে একই পদে যথাক্রমে ৮, ১২, ১৫ বছর চাকরি করতে হবে। ২০০৮ সালে রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে পদোন্নতি প্রাপ্ত শিক্ষকদের যেখানে উক্ত সুবিধা পেতে ওই শিক্ষকদের ৩০ বছর চাকরি করতে হবে। কিন্তু জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদটিই সৃষ্টি হয় ২০০৮ সালে ইতিপূর্বে তারা কার্যকর ভাতা হিসেবে ৫০ টাকা অতিরিক্ত পেতেন। এতে একদিকে যেমন সাধারণ শিক্ষক পদোন্নতিতে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন অন্যদিকে সরকারি কোষাগার থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা বিধিবহির্ভূত সুবিধা পেয়েছেন অনেক শিক্ষক।

এসব সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তিতে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের সবাইকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করেন সাধারণ শিক্ষকরা।

এ বিষয়ে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন খান বলেন, আগের কর্মকর্তা তাদের পদোন্নতি দিয়ে গেছেন। যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে সে বিষয়ে আমার জানা নেই।